banner
bangla-bar

 

ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়িয়ে

অমিত ভাদুড়ি

১২ই নভেম্বর ২০২০ তারিখের দি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত অমিত ভাদুরির লেখা প্রবন্ধ "In the middle of end game of fascism" এর বাংলা সংক্ষেপিত অনুবাদ। অনুবাদ করেছেন সুমিতা সরকার ও রবিন চক্রবর্তী।

অর্ধচেতন অবস্থায় সে জেগে উঠল দুঃস্বপ্নটা থেকে। পশুটার অবয়ব বুঝতে পারেনি। এমন কি এ বিষয়েও সে নিশ্চিত নয় যে সে ওটার পেটের ভিতরে ছিল, না বাইরে। উঠে বসে একটু জল খেল সে। ভয়ানক বিচলিত বোধ করে সে সেই মাঝরাত্তিরেই ফোন করল প্রিয় বন্ধুকে।

ওদিক থেকে উত্তর এলো - “চিন্তা করিস না। তোর দেখা পশুটা হল আমাদের চারপাশের দূষিত বাতাসের মত। খুব শিগগিরই এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবি।”

সত্যি কথা বলতে কি, ফ্যাসিবাদ যখন গুঁড়ি মেরে ঢোকে, তখন সেটা চার পাশের দূষিত বাতাসের মতনই। যখন তা উন্মত্ত হয়ে তাণ্ডব শুরু করে তখন হয়তো এর বিদঘুটে চেহারাটা আবছাভাবে চেনা যায়। কিন্তু ততক্ষণে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, আমরা ঠাঁই পেয়েছ তার পেটের ঠিক মধ্যিখানে।

তাই ফ্যাসিবাদের লক্ষণগুলি চিনে নেওয়াটা এই মুহূর্তে আমাদের অবশ্য কর্তব্য।

প্লেটোর সময় থেকেই আমরা জানি যে, কোনো কিছুর আদর্শ স্বরূপ বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায় না। একটা আদর্শ বৃত্ত অথবা আদর্শ গণতন্ত্র কোনটাই বাস্তবে দেখা যায় না। ঠিক সেরকম কপিবুক ফ্যাসিবাদও দেখা যায় না। তবে এর স্বরূপটা চেনা যায় এর বিশেষ কিছু চারিত্র লক্ষণ দেখে। আর সেটা চিনতে পারলে তখন আমরা বুঝতে শুরু করি এর সম্পর্কে আমাদের মনের মধ্যে থাকা ধারনার সাথে এগুলির সম্ভাব্য যোগসূত্র। বুঝতে শুরু করি চারপাশের বাস্তবতা আর ফ্যাসিবাদের আংশিক রূপের যোগসুত্র। বুঝতে শুরু করি গণতন্ত্রের ত্রুটিগুলো। এবং এই যোগসূত্র আমাদের চারপাশের বাস্তবতার বহুমুখী এবং জটিল স্বরূপটাকে বুঝতে সাহায্য করে। আমরা বুঝতে পারি পশুটা শিকারে বেরিয়েছে।

সেই অনুসারে, ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক লক্ষণগুলি প্রথমে চিনে নেওয়া দরকার। তারপর দরকার তাদের আন্তঃসম্পর্কের বিশ্লেষণ।

রাজনৈতিক লক্ষণ

ফ্যাসিবাদের সব থেকে চেনা রাজনৈতিক স্বরূপটি হল কল্পিত কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে সামরিক শক্তির আস্ফালনের মাধ্যমে ‘বাহুবলী’ জাতীয়তাবাদের জিগির তোলা। শত্রু নিজের দেশের মধ্যেকার হতে পারে, বাইরেরও হতে পারে। দেশের ভিতরের এবং বাইরের শত্রু এক যোগে ‘আমাদের’ জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে এমন জিগির আজ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের সব থেকে সফল কৌশল। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায়। একদিকে যেমন দেশের মধ্যে দমনপীড়ন চালানো যায় এবং অন্যদিকে বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রের বাহানায় উগ্র দেশপ্রেমের ঝড় তোলা যায়। -  দুটিকেই সঙ্গত বলে দাবী করা যায়।

জাতীয়তাবাদের জিগির নেশার বস্তুর মত। একবার মগজে ঢুকিয়ে দিতে পারলে মানুষ নেশাগ্রস্তের মত আচরন করে। নেতারা যাই বলে তাতেই বিশ্বাস করতে শুরু করে। এবং প্রবল আবেগে তার অনুগামী হয়ে ওঠে। এমন একটা সময়ে জনসাধারণকে বোঝানো যায় যে এখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। এখন ছোটখাটো দাবী-দাওয়া জানানো বা প্রতিবাদ করার সময় নয়। এই মুহূর্তে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, অপরাধমূলক কার্যকলাপ, পরিবেশ দূষণ, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, ইত্যাদি সমস্যাগুলির সমাধান ভবিষ্যতের জন্য মুলতুবী থাকতে পারে। যুদ্ধ এখনও ঘাড়ের ওপর এসে পড়েনি ঠিকই, তবুও দেশ এখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এমনটাই বিশ্বাস করাতে চান দেশের নেতারা। আর এই নকল যুদ্ধকালীন জরুরী অবস্থায় দেশপ্রেমিক হিসেবে দেশবাসীর একমাত্র কর্তব্য হল “শহীদ” সেনাদের বীরত্বের কথা অবিমিশ্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা। - যদিও এই মৃত্যু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শাসকদের তৈরি-করা সংঘাতেরই ফল।   

সামাজিক লক্ষণ

যখন একটি রাষ্ট্র জাতীয়তাবাদকেই রাজনীতির একমাত্র হাতিয়ার করে তোলে এবং রাষ্ট্রের সুরক্ষার নামে ঘনিয়ে তোলে এক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, আর দাবি করে যে অন্তঃশত্রু ও বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দেশপ্রেম দেখানো “আমাদের” কর্তব্য, তখন বুঝতে হবে যে রাষ্ট্র ফ্যাসিবাদী পথের পথিক। ফ্যাসিবাদকে চিনে নেবার এটা হল অন্যতম প্রধান উপায়। আর এই ফ্যাসীবাদি প্রবণতার দ্রুত প্রসার ঘটে যদি শত্রু হিসেবে অন্য কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী বা কোনো উপজাতি বা ভিন্ন ঐতিহ্যের উদ্বাস্তু গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা যায়। এই পরিস্থিতিতে এর বিপরীতে ঐক্যের কথা যারা বলে তাদেরকেই নিশানা করে রাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণার বীজ ছড়ানো শুরু হয়।  

এক দিকে প্রাগৈতিহাসিক কালের পশ্চাদ্‌পদ প্রথা বা বিষয় কে “আমাদের” গৌরবময় অতীত ঐতিহ্য বলে তাকে অনুসরন করার কথা বলা হয় আবার একই সাথে আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রের বহর দেখিয়ে জাতীয়তাবাদী আস্ফালন দেখানো হয়। আবার মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য পরিবেশনের জন্য সব থেকে আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পেছ-পা হয় না। এ এক বিচিত্র বিসদৃশ জগাখিচুড়ি ব্যাপার। এক দিকে সামরিক প্রয়োজনে ও প্রচারের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা, অন্য দিকে জাতপাত, লিঙ্গ, ধর্ম, ইত্যাদি বিষয়ে আধুনিক চিন্তা ও শিক্ষা বিরোধি পশ্চাদ্‌পদ প্রথার গুণগান - এই দুইয়ের একযোগে অনুসরণ ফ্যাসিবাদী চরিত্রের এক নিশ্চিত লক্ষণ। 

কোনো বিশেষ মতের প্রচার বা যুদ্ধের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করার ব্যাপারে প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। প্রচার দিয়ে প্রবল বিদ্বেষ ও বিভেদ সৃষ্টি করা যায়। আমাদের দেশে তার প্রয়োগ দেখছি। অত্যাধুনিক ডিজিটাল প্রচার মাধ্যমকে ‘ওয়েপন অব মাস ডেসট্রাকশান’-এর মত ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তি ও সামাজিক সচেতনতাকে সমূলে ধ্বংস করা হচ্ছে এই মাস-মিডিয়ার মাধ্যমে। একজন বাইরের লোক যদি একটি ছবিতে দেখেন যে একজন রাজনৈতিক নেতা অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্রকে ফুল-মালা দিয়ে পুজো করছেন, আবার পরক্ষণেই যদি দেখেন যে আর এক নেতা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একদল বৈজ্ঞানিক শ্রোতাকে বোঝাচ্ছেন যে আমাদের দেশের প্রাচীন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি আরো কত বেশি উন্নত ছিল – তা'হলে সেই দর্শক নিশ্চিতভাবেই দিশেহারা বোধ করবেন।   

খবর মানে বিভ্রান্তিকর ব্যাপার এখন। এক দিকে ফেক খবর তথা ঘরে-তৈরি মিথ্যে খবর ছড়ানো হচ্ছে, অন্য দিকে গুরুত্বের হেরফের করে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পছন্দসই খবর পরিবেশন করা হচ্ছে। সেখানে বেকারত্ব, কৃষকদের দুরবস্থা, জাতিগত হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ের খবরকে যথা সম্ভব আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। -বা “তুচ্ছ” খবর হিসেবে দেখান হচ্ছে, যাতে সরকারকে কোনোভাবে অসুবিধেজনক অবস্থায় না পড়তে হয়। আর জাতীয়তাবাদী হুজুগ তৈরিতে বাধা সৃষ্টি না হয়। মিডিয়া স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই এই কাজ করছে।

মিথ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে দু’ভাবে। এক, মিথ্যে খবর তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়ে। দুই, বিকৃত খবর ছড়িয়ে পড়তে দেখেও চোখ বুজে থেকে। “এর আগে কখনো এত কম সংখ্যক লোক এত বেশি সংখ্যককে বোকা বানাতে পারেনি,” - উইন্সটন চার্চিলকে ব্যঙ্গ করে অল্ডাস হাক্সলি এক সময় বলেছিলেন একথা (ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড রিভিজিটেড, লন্ডন, ভিন্টেজ বুকস, ১৯৯৪, পৃ ২৭)। এর পরেও যেটুকু বিরোধী মত পড়ে থাকে তার মোকাবিলা করার জন্য আছে দমন আইন। - তথাকথিত জাতীয়তাবাদ-বিরোধী কাজকর্ম দমনের কঠোর আইন।  

অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থার মত আবহ সৃষ্টি করে সরকারকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সমস্ত রকম চেষ্টা করা হয়, যাতে বিরোধীদের নির্মমভাবে দমন করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন হয় মিডিয়া, বিচারব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা ও অন্যান্য তথাকথিত স্বয়ংশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে যতটা সম্ভব নমনীয় করে তোলা। কিন্তু তবু, এক অনিবার্য অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় অর্থনীতিতে। যদি রাষ্ট্র অনেক বেশি কর বসায় তাহলে তার জনমোহিনী রূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার যদি বিশেষ করে ধনিক শ্রেণীকে টার্গেট করা হয়, তাহলে তারা বিরূপ হয়ে উঠবে। তার বদলে ধনী বণিক শ্রেণীকে খুশি রেখে সরকারের সেবা নিযুক্ত রাখাই ভাল বিবেচনা করা হয়। এই অবস্থায় দেশের সরকার দরিদ্র শ্রেণীর জন্য যা করতে পারে তা হল গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বক্তৃতা শোনানো আর মাঝে মধ্যে টোকেন সাহায্য দেওয়া। আর আসল যা ব্যবস্থা করা হয় তা হল প্রাকৃতিক সম্পদ সস্তা দরে কর্পোরেটের হাতে বিলিয়ে দেওয়া এবং নানা রকম লাভজনক চুক্তির সাহায্যে বড় ব্যবসায়ীদের আরো বড়ো হতে সাহায্য করা।

বড় ব্যাবসায়ীরা আরও বড় হতে চায়। সব ধরণের ব্যাবসা ও উৎপাদন ব্যাবস্থা  নিজের হাতে কেন্দ্রভূত করতে চায়। এর জন্য সরকারের সহায়তা দরকার। এর জন্য সরকারকেও বড় তথা প্রবল হতে হয়। একই সাথে দুর্বল সরকার এবং অবাধ বাণিজ্যের ক্ষেত্র হবে, এমনটা হয় না। এটা নেহাতই সোনার পাথরবাটির মত অবস্থা। আসলে ফ্যাসিবাদ ছোট ব্যবসায়ের পরিমন্ডলে অবাধে কাজ করতে পারে না। ছোট কৃষি-বাণিজ্য, ছোট শিল্প, ছোট পরিষেবা ব্যবসা – এই রকম পরিমন্ডল ফ্যাসিজমের অনুকূল নয়।   

বড় ব্যবসা আরও বড় হওয়ার বিনিময়ে তারা সরকারকেও সাহায্য করে। সরকারের পেছনের গোষ্ঠীকে অর্থবলে বলীয়ান করে তোলে। এইভাবে পরস্পরের মধ্যে নির্ভরতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই অবস্থায় যেকোনো সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভকে জাতীয় স্বার্থের দোহাই পেড়ে জনতার বিরুদ্ধেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। বহিঃশত্রু ষড়যন্ত্র করছে এই অজুহাতে “আমাদের” জাতীয়তাবাদ রক্ষার নামে বিরোধীদের ওপর নজরদারি করা যায় এবং অতি সহজেই তাদের ওপর দমন পীড়ন চালানো যায়।  

এই সব রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থাগুলিকে নানাভাবে একত্র করে নিয়ে দেখলে ফ্যাসিবাদ নামক পশুর চেহারার আদলটি বোঝা যায়।

একটি দৃষ্টান্ত নেওয়া যাক। একটি সমাজের দৃষ্টান্ত যেখানে মোটামুটি সংহতিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে এবং এই সমাজের শিকড় গাঁথা রয়েছে প্রচলিত কিছু ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের গভীরে। এমন একটি সমাজেও সহজেই বিদ্বেষের বীজ বপন করা যায়। ঐতিহ্য বা মূল্যবোধ সম্পর্কে কিছু সন্দেহের বিষ ছড়িয়ে দিয়েই সেটা করা যায়। যদি প্রশ্ন তোলা হয় যে সব নাগরিকই কি “আসলে” এই প্রচলিত মূল্যবোধ বা ঐতিহ্যে বিশ্বাস করেন? একটি বৈচিত্রময় সমাজে কিছু প্রভেদ তো থাকবেই। আর ঐতিহ্য সাধারণ ভাবে জড়িয়ে থাকে ধর্মের সাথেই। সেখানে এমন প্রশ্ন তোলার মূলে লক্ষ্যই থাকে সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষেরা এবং উদ্বাস্তুরা। ক্ষেত্র বিশেষে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মানুষও এর লক্ষ্য হতে পারে।  

একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে “আমাদের কেউ নয়” বলে চিহ্নিত করার মধ্য দিয়েই শুরু হয়  ফ্যাসিবাদী খেলার প্রাথমিক পর্ব। তবে এই শুরু করতে পারাটা নির্ভর করে সেই সমাজের ধর্ম, জাতিতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পূর্বাপর সম্বন্ধের ওপর। এরপর শুরু হয় এই খেলার পরের পর্ব। - রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের উপর হিংসার ঘটনা ঘটিয়ে। যার ফলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা প্রভেদ পরস্পরের প্রতি ঘৃণায় পরিণত হবে। এই ঘৃণার মাত্রা বাড়ানো যায় যদি প্রচার করা হয় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অসঙ্গতভাবে কিছু সুবিধা পাচ্ছে এবং সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের স্বার্থের হানি করে এই সুবিধা পাচ্ছে। 

রাষ্ট্র ও তার তাঁবেদার মিডিয়ার দ্বারা ক্রমাগত ঘৃণার বীজ ছড়ানোর ফল হয় ভয়ঙ্কর। শুরু হয় দাঙ্গা লিঞ্চিং ইত্যাদির মত হিংসাত্মক ঘটনা। রাষ্ট্র এগুলিকে অতিতুচ্ছ ঘটনা বলে উপেক্ষা করে। বা 'বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যে'র মহিমা বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে দায় সারে। তাতে পরোক্ষভাবে হিংসাকারীদেরই উৎসাহিত করা হয়। এই সব কিছুর মধ্য থেকেই জন্ম নেয় ফ্যাসিবাদ। রাষ্ট্র তখন মানুষকে এই বলে আশ্বস্ত করে যে তারা এইসব ফালতু বিভেদ নির্মূল করে সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান করে ফেলবে। প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা দেশে পৌরাণিক কালের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনবে। এইভাবে আমাদের দেশে ফ্যাসিবাদের শেষ পর্যায়ের খেলার মাঝখানে আমরা এসে পড়েছি। এখন এখানে নৈঃশব্দের সংস্কৃতিই নিয়ম। যেটা মাফিয়াদের রাজত্বেরও অলিখিত নিয়ম। এখন নাগরিকদিগের জন্য সন্দেশ হল –“যারা কালা, কানা এবং বোবা তাদেরই বেঁচে থাকার অধিকার থাকবে”।

সূত্রঃ In the middle of end game of fascism – by Amit Bhaduri   
The Telegraph, 02.11.20

https://www.telegraphindia.com/india/in-the-middle-of-end-game-of-fascism-the-telltale-characteristics-and-how-we-compare-against-the-different-stages/cid/1796236

Bangla Translation by Sumita Sarkar

Back to Home Page

Frontier
Dec 7, 2020


Sumita Sarkar sarkarsumita1965@gmail.com

Your Comment if any